মাদ্রাসাতুল হারামাইন ও মসজিদে নামিরাহ্

লক্ষ্য-উদ্দেশ্য

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের আদর্শকে সামনে রেখে দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিলো, সেটিই আমাদের মাদরাসাতুল হারামাইন এর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। অর্থাৎ এমন কিছু যোগ্য ওয়ারিসে নবী তৈরী করা যাদের সকাল সন্ধ্যার চিন্তা ও গুরুদায়িত্ব হবে-
১. শিরকমুক্ত তাওহীদে খালিসের প্রতিষ্ঠা।
২. আল্লাহর কালিমা পৃথিবীর বুকে বুলন্দ করা।
৩. সুন্নাত প্রতিষ্ঠা এবং বিদ’আতের মুলোৎপাটন।
৪. ভ্রান্ত মতবাদের খন্ডন এবং সহীহ আক্বীদার প্রসার।
৫. ইলমে ওহী তথা কুরআন সুন্নাহর শিক্ষা আকাবির ও আসলাফের মেযাজ ও তরীকায় বাস্তবায়িত করা এবং এই শিক্ষাকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া।
কিছু বৈশিষ্ট্য

মাদরাসাতুল হারামাই সবেমাত্র ভূমিষ্ট হয়েছে। তাই এখনি এর জন্য কোন বৈশিষ্ট্য দাবি করে বসা অযৌক্তিক। এখানে আমরা এমন কিছু বৈশিষ্ট্য প্রস্তাব করবো- আমাদের বিশ্বাস, যেসব একদিন প্রতিষ্ঠানটির প্রতীক ও মহিমা হয়ে কার্যতও বাস্তবতার মুখ দেখবে। ইনশাআল্লাহ।

১. প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর উপর ভরসা। এবং সাহায্য প্রার্থনার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হিসেবে নামায ও ধৈর্যকে বেছে নেওয়া।
২. ইখলাস ও ঐকান্তিকতা আমাদের কাছে মুখ্য। লৌকিকতা কিংবা পার্থিব প্রতিযোগিতা এই মাদরাসার মেযাজ পরিপন্থী।
৩. জামা’আতের সাথে নামায এবং তেলাওয়াতে কুরআনের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ।
৪. প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্নাহর পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ এবং প্রতিষ্ঠান জুড়ে আমল ও আখলাকের এক অভূতপূর্ব আবহের সৃষ্টি।
৫. প্রতিষ্ঠানে পারস্পরিক ওঠাবসা ও লেনদেনের ক্ষেত্রে শরয়ী ও সামাজিক উভয় দিক থেকেই সর্বোচ্চ ভদ্রতা, উদারতা ও মার্জিত আচরণের পরিবেশ।
৬. স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি।
৭. মানসম্মত খাদ্য তালিকা। এবং এ ক্ষেত্রে সব ধরণের সংকীর্ণ মানসিকতার বর্জন।
৮. প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রদের সার্বিক উন্নতিকল্পে আসাতিযার সাপ্তাহিক মাশওয়ারা।
৯. তালিবুল ইলমদের সম্পূর্ণ ফ্রি শিক্ষা ও ফ্রি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
১০. মানবসেবা, দুস্থ, দুর্গত ও মজলুম মানুষের পাশে দাঁড়াতে অত্র প্রতিষ্ঠান সদা বদ্ধপরিকর।
১১. ইমাম মালেক রহ. এর বিখ্যাত উক্তির(১) চেতনা থেকে মাদরাসাতুল হারামাইন নতুনত্বকে ভয় করে, পুরানত্বের অনুসরণে স্বস্তিবোধ করে। তবে কর্মপদ্ধতি ও শিক্ষানীতির ক্ষেত্রে যুগোপযোগী তাৎক্ষণিক কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে মাদরাসাতুল হারামাইন একগুঁয়েমিও প্রদর্শন করে না। বরং আকাবির-আসলাফের আদর্শকে ঠিক রেখে উপদেষ্টা, শূরা ও উলামায়ে কেরামের মতামতের সমন্বয়ে স্থির করা যেকোনো পরিবর্তনকে মাদরাসাতুল হারামাইন স্বাগত জানায়। যা খোদ দারুল উলূম দেওবন্দেরও একটি কর্মপদ্ধতি।